“নির্মানাধীন বিল্ডিং এর ছাদ থেকে লোহার রড পড়ে শিশু রিয়া নিহত”
ঘটনাটি দেশের সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচারিত হলে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মহোদয়ের নির্দেশেক্রমে প্রকল্প কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ঘটনাটি সরেজমিনে তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্তদল ঘটনাটির তদন্ত সম্পন্ন করে। য়া সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন আকারে নি¤েœ দেওয়া হল।
এরশাদ মিয়া স্বপরিবারে ঢাকা জেলার রমনা থানাধীন ৭/২/ডি, পশ্চিম হাজীপাড়া ঠিকানস্থ বাসায় প্রায় ৫ বছর ধরে বাসার তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে বসবাস ও কর্মরত আছে। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে রিদয় (১০) স্কুলে পড়ালেখা করে। ছোট মেয়ে রিয়া (৫) তার মায়ের সাথে বাসায় থাকে। গত ২৮/০৩/২০১৬ ইং সকাল ১১ঃ০৩০ ঘটিকার সময় শিশু রিয়া বাসার পাশের রাস্তায় ভূট্টা কেনার জন্য যাচিছল। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার পাশেই স্টার হাউজিং এর নির্মান কাজ চলছে। সংস্থার তদন্তদল সরেজমিনে দেখতে পায় যে, নির্মানাধীন বিল্ডিং এর নির্মান কাজ চলাকালীন অবস্থায় যে সব নিরাপত্তার প্রয়োজন তা মোটেও নাই। গত এক মাস পূর্বেও উক্ত বিল্ডিং এর উপর থেকে লোহার রড ও ইট পাশের বাসার ছাদে বা টিনের উপর পড়লে বসবাসকারীরা আতংকিত হয়ে পড়ে। ফলে বাসার মালিকগন স্টার বিল্ডিং কর্তৃপক্ষ-কে বিষয়টি অবহিত করলেও তারা এ বিষয়ে কোন কর্নপাত করেনি। নির্মানাধীন বিল্ডিংটি জনচলাচল রাস্তার পাশেই তৈরী হচ্ছে। সুতরাং এধরনের ঘটনা ভবিষতে আরও ঘটার আশংকা রয়েছে।
গত ২৮/০৩/২০১৬ ইং সকাল ১১ঃ০৩০ নির্মানাধীন ভবনের চতুর্থ তলা থেকে লোহার রড রিয়ার মাথার উপর পড়লে সে মারাত্বক জখম প্রাপ্ত হয়। প্রতিবেশী ও রাস্তায় চলমান লোকজন রিয়াকে স্থানীয় ক্লিনিকে নিলে ডাক্তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে। ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতলে নেওয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে রমনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মানাধীন ভবনের শ্রমিকদের আটক করে থানায় আনে। এবিষয়ে রমনা থানায় একটি অপমৃত মামলা হয়।
গত ২৯/০৩/২০১৬ ইং তারিখে রিয়ার মৃত দেহ নিয়ে তার বাবা মা গ্রামের বাড়ি মুন্সিগজ্ঞে নিয়ে গিয়েছে এবং সেখানে তাকে দাফন করা হয়েছে। সংস্থার তদন্তদল উক্ত ঘটনা জানতে পেরে ঘটনাস্থল, আশে পাশের প্রতিবেশী, দোকানদার ও থানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানতে পারে মূলত স্টার কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারনে দূর্ঘনাটি ঘটেছে।
- সংস্থার তদন্তদল ভিকটিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।
- তারা ঢাকায় এসে সংস্থার সাথে যোগাযোগ করবে এবং প্রয়োজনে আইনী সহায়তা নিবে।
তদন্তদলের মতামতঃ
তদন্তদল প্রকাশ্যে ও গোপনে সরেজমিনে তদন্তকরে যে তথ্য পেয়েছে তার উপর ভিত্তি করে মতামত দিচ্ছে ঃ
উপরোক্ত বিষয়সমূহ বিচার বিশে¬ষণ করে তদন্তদল এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, শিশু রিয়ার(৫) মৃত মূলত ষ্টার বিল্ডিং কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও নিরাপত্তাহীনতাই দায়ী বলে প্রাথমিকভাবে তদন্তদল মনে করে।
তদন্তদলের সুপারিশঃ
১। অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা।
২। অপরাধীর শাস্তির বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশ করা যাতে আর কেহ এ ধরনে গর্হিত অপরাধ করার সাহস না পায়
৩। ভিকটিমের পরিবারকে সংস্থার পক্ষ থেকে আইনগত সহায়তা প্রদান করা যেতে পারে।
আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্তশেষ করেছি। ভবিষ্যতে আরো তদন্তের প্রয়োজন হতে পারে।
“বনানীতে আবাসিক ভবনে গ্যাস বিস্ফোরন”
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মহোদয়ের নির্দেশে “বনানীতে আবাসিক ভবনে গ্যাস বিস্ফোরন” ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্তদল গঠন করে ঘটনার সরেজমিন তদন্ত সম্পন্ন করা হয়। যা সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হল।
রাজধানীর বনানরী আবাসিক এলাকায় গত ১৭ মার্চ ২০১৬ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ১:৪৫ ঘটিকার সময় বি- ব্লকের, ২৩ নং রোডের ৯ নম্বর “সিলভার ষ্টোন সাফারী” নামক বাড়িতে গ্যাস বিস্ফোরনে ভবনটিতে আগুন লাগে। প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকার লোকজন জানায়, ভবনের দুই, তিন তলায় প্রথমে আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায় এবং তা ক্রমান্বয়ে ষষ্ট তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বসবাসকারীদের অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে ভবনের ছাদের উপর অবস্থান নেয়।
তৃতীয় তলার বাসিন্দা সাইফুল্লাহ জানান, ১৭ মার্চ ২০১৬ তারিখে ভোর ৫.০০ টার সময় ভবনের নিরাপত্তা কর্মী ইন্টারকমের মাধ্যমে তাকে জানায়, অতিরিক্ত গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে সে তাদেরকে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি ফোনে অবহিত করার পরামর্শ প্রদান করে। নিরাপত্তাকর্মী বিষয়টি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা সকালে উক্ত স্থানে গিয়ে মাটি চাপা দিয়ে ভরাট করে।
তদন্তদলের কাছে পাশের ১৪ নম্বর বাড়ির নিরাপত্তা কর্মী মিলন জানিয়েছে,রাস্তায় কয়েকদিন ধরে খুড়াখুড়ি চলছে। গত ১৭ মার্চ ২০১৬ ইং তারিখ রাত দুটার দিকে গ্যাসের লাইন ফুটো হয়ে যায়। শো শো শব্দে গ্যাস বের হচ্ছিল। রাস্তায় জমে থাকা পানিতে বুদ্বুদ করতে দেখা যায়। সেখানে গ্যাসের গন্ধও পাওয়া যায়।
ভবনের বাসিন্দারা জানান, রাত আনুমানিক ১:৪৫ ঘটিকার সময় বিস্ফোরনে তাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। তারা আগুনের তীব্রতায় ফ্লাটের জানালার কাঁচ ভেঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে দেখে। তারা আরও জানায়, এসময়েও স্যুয়ারেজের নালা থেকে গ্যাস বের হচ্ছিল এবং গ্যাসের গন্ধও তখন আশে পাশে ছড়িয়ে পড়েছিল। ভবনের তৃতীয় তলার উত্তর পাশের বাসিন্দা নাসের আহম্মেদ জানান, বিস্ফোরনের শব্দে তাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। তারা লক্ষ্য করে যে, ভবনের উত্তর পাশের্^ আগুন জ¦লছে। সে তাৎক্ষনিকভাবে তার স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে নিচে নেমে আসে। বাসিন্দরা জানান, সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে ভবনের দক্ষিন দিকের ফ্লাটগুলোর। অগ্নিকান্ডের পর থেকে উক্ত ভবনে কেউ বসবাস করছে না।
ভবনের মালিক শামসুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা চর্তুথ তলায়্ বাস করেন। ভয়াবহ এই আগুনের উৎপত্তি সম্পর্কে বাড়ির মালিক জানান, রাস্তায় গ্যাস লাইন লিক হয়েছিল। কয়েকদিন ধরে সেখানে গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। বিষয়টি অনেকবার তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তার ছেলে নাভেদ বিস্ফোরন ও অগ্নিকান্ডে দগ্ধ হয়েছে। তাকে ইউনাইটেড মেডেকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্তব্যরত অফিসার মাহমুদ এর সাথে তদন্তদল যোগাযোগ করলে তিনি জানান, অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে তাদের ১৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে ১:৫২ টা থেকে সোয়া ৩:০০ টা পর্যন্ত আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছে। আগুন নিয়ন্ত্রনে এনে তারা ভবনের সব লোকজনদেরকে উদ্ধার করেছে। তিনি আরও জানান, উদ্ধার কার্যক্রমে পুলিশ ও এলাকাবাসী তাদের সহযোগিতা করেছে।
তার কাছে ঘটনাটির কারন জানতে চাইলে সে তদন্তদলকে জানায়, ফায়ার সার্ভিস এন্ড ডিফেন্স এর কর্মীরা ভবনের নিচের গ্যাস লাইনের লিকেজ পেয়েছে। সেখান থেকেও বিস্ফোরন ঘটতে পাওে বলে ধারনা করা যাচ্ছে।
এলাকার বাসিন্দা আবুল হাসান চৌধুরী জানান, ঘটনার কিছ ুপরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। তিনি পাশের ভবনের ছাদ থেকে হ্যান্ড মাইকে আটকে পড়া বাসিন্দাদের সাহস দেন।
এ বিস্ফোরন ঘটনায় আহত হয়েছে প্রায় ২৫ জন। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। গুরুতর আহতদের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে বনানী থানায় গেলে ডিউটি অফিসার জনায় যে, উক্ত দিন ঘটনার খবর পেয়ে থানার ও,সি সালাউদ্দিন খান অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করেন।
এ ঘটনার জন্য গ্যাস লাইনেরত ত্রুটিকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা। তদন্তদল ঘটনাস্থল ও উক্ত ক্ষতিগ্রস্থ ভবন পরিদর্শন করে। তারা জানায় বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্থ ভবন দেখে বোঝার কোন উপায় নেই যে, সেগুলোতে কোন মানুষ বাস করতো। বিস্ফোরনে ভবনের দেয়াল, জানালা কপাট যেমন ধ্বসে গেছে, তেমনি আগুনের ধোয়ায় কালো রংয়ের রুপ পেয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ৯ নং বাড়ি ছাড়াও গ্যাস বিস্ফোরনে ৭,১৪, ৯২, ৯৪, ৯৬ নম্বর বাড়িও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬শে ফেব্রুয়ারী উত্তরার ভবনের সপ্তম তলায় গ্যাসের আগুন দগ্ধ হয়ে একই পরিবারের চারজনের মৃত্য হয়। ঐ বাসাতেও গ্যাসের সমস্যা ছিল। বাসাটি ভাড়া নেওয়ার পর পরই বাসার মালিককে অবহিত করেছিলও তা মেরামত না করায় দূঘর্টনা ঘটে।
তদন্তদলের মতামতঃ
তদন্তদল প্রকাশ্যে ও গোপনে সরেজমিনে তদন্তকরে যে তথ্য পেয়েছে তার উপর ভিত্তি করে মতামত দিচ্ছে ঃ
উপরোক্ত বিষয়সমূহ বিচার বিশ্লে¬ষণ করে তদন্তদল এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, গত ১৭ মার্চ ২০১৬ ইং তারিখ মধ্যরাতে রাজধানীর বনানী এলাকাস্থ ব্লক- বি, ২৩ নং রোডের ৯ নম্বর “সিলভার ষ্টোন সাফারী” নামক বাড়িতে গ্যাস বিস্ফোরনে ভবনটিতে আগুন লাগে। তদন্তদল মনে করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারনে গ্যাস বিস্ফোরণ, বসবাসকারীদের জীবনের ঝুকি ও ভবনটি বিনষ্ট হয়েছে।
তদন্তদলের সুপারিশঃ
১। অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা।
২। অপরাধীর শাস্তির বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশ করা যাতে দেশের কোন সরকারী ও বেসরকারী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান দায়িত্বহীনতার পরিচয় না দেয়।
৩। ক্ষতিগ্রস্থদের সংস্থার পক্ষ থেকে আইনগত সহায়তা প্রদান করা যেতে পারে।
৪। সংস্থার পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ক্ষতি পূরনের ব্যবস্থা করা।
আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্তশেষ করেছি। ভবিষ্যতে আরো তদন্তের প্রয়োজন হতে পারে।
“গৃহকর্মীকে ধর্ষণের পর হত্যা”
“গৃহকর্মীকে ধর্ষনের পর হত্যা” ঘটনাটি দেশের সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচারিত হলে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মহোদয়ের নির্দেশেক্রমে ঘটনাটি সরেজমিনে তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্তদল ঘটনাটির তদন্ত সম্পন্ন করে। য়া সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন আকারে নি¤েœ দেওয়া হল।
ওসমান গনির বাড়ি কিশোরগজ্ঞ জেলার ইটনা উপজেলা ওয়ারা কান্দিপাড়া গ্রামে। ওসমান গনির পরিবার দরিদ্র হওয়ায় গত প্রায় ৮/৯ মাস আগে সপরিবারে ঢাকা আসে। স্ত্রী ফুলবানু, পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে উত্তর ইব্রাহিমপুর বসবাস করেন। ওসমান গনি রিক্্রা চালক, স্ত্রী বাসায় বুয়ার কাজ করে। বড় মেয়ের বিয়ে দেয় কিছু কিছু দিন আগে এবং দ্বিতীয় মেয়ে জনিয়া গার্মেন্টসের চাকুরী নিয়ে দুই মাস সেখানে কাজ করে ছেড়ে দেয়। জনিয়ার মা ফুলবানু মিরপুর- ১৩ নম্বরে ন্যাম গার্ডেন অফিসার্স কোয়ার্টারের তিন নম্বর ভবনের ৪০৩/বি ফ্লাটে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। বাসাটির গৃহকর্তা আহসান হাবিব জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এবং তার স্ত্রী ও এক ছেলে রুম্মান হাবিব (২৬) উক্ত ফ্লাটে বাস করেন। ফুলবানু শারীরিকভাবে অসুস্থ্য থাকায় তার মেয়ে জনিয়া ৬/৭ দিন ধওে মায়ের বদলী হিসাবে কাজ করছিল।
গত ০৬/০৩/২০১৬ ইং তারিখ রবিবার সকাল আনুমানিক ৬:৩০ ঘটিকার সময় জনিয়া বাসা থেকে ন্যাম গার্ডেনের ৩ নং ভবনে ৪০৩/বি ফ্ল্যাটে কাজর উদেশ্যে যায়। সকাল আনুমানি ৮:৩০ ঘটিকার সময় জনিয়ার মা সংবাদপায় উক্ত বিল্ডিং এর নিচে তার মেয়ের লাশ পড়ে আছে। জনিয়ার মা ফুলবানু সেখানে ছুটি যায় এবং মৃত দেহ পরেথাকতে দেখে ওড়না দ্বারা মুখ বাধা। তার বাড়ির ম্যানেজার সেলিম ও স্ত্রী জহুরা বেগম ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে এসআই কামরুজ্জামান তার ফোর্সসহ ঘটনাস্থল থেকে সুরতহাল রিপোর্ট ও আলামত জব্দ করে লাশ কাফরুল থানা নেয়। এদিকে জনিয়ার বাবা ১০:৩০ ঘটিকার সময় তার মেয়ের মৃত্যুও সংবাদ শুনতে পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। থানা থেকে লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
জনিয়ার বাবা মা এবং ঘটনাস্থলে গিয়ে জারা লাশ দেখেছে তাদের দাবী গৃৃহকর্তা আহসান হাবিবের ছেলে রুম্মান বিন আহসান (২৬) জনিয়াকে ধর্ষনের পর হত্যা করে বিল্ডিং এর নিচে ফেলে দেয়া হয়েছে।
তারা জানায় জনিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এছাড়া তার পরনের সালোয়ারেও ধর্ষনের আলামত ছিল বলে তাদের দাবী। তারা আরো জানায় সুরত হাল রিপোর্ট এর সময় একজন নারী পুলিশ অফিসার ছাড়ায় সুরতহাল করা হয়েছে যা আইনের পরিপন্থী। একজন নারী পুলিশ অফিসার হলে আরো ভালোভাবে আলামত নিতে পারত বলে তারা দাবী করে। জনিয়ার বাবা জানায় সে ধর্ষনের পর হত্যা মামলা করতে চায়লেও থানার পুলিশ নিয়মিত মামলা না নিয়ে অপমৃত্যু মামলা হিসাবে গ্রহন করে। তারা মনে করে বিবাদী পক্ষ সরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী হওয়ায় ময়নাতদন্তের প্রকৃত প্রতিবেদন ভিন্নক্ষাতে প্রবাহিত করতে পারে।
জনিয়ার বাবা রিকসা চালক ওসমান গনি তদন্তদলকে জানায় যে, তার মেয়েকে ধর্ষনের পর হত্যা করেছে। তার লাশ যখন ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়, তখন তার মুখে ওড়না বাধা ছিল। কনুই আর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ ছিল।
ঘটনার পরও পুলিশ সব ঘটনা জেনেও হত্যা মামলা নেয়নি। জেনিয়া হত্যা ঘটনাকে কেন্দ্র করে উক্ত দিন এলাকাবাসী ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও থানা ঘেরাও করেছে। মূলতঃ ন্যাম ফ্লাটের বাসায় জেনিয়া কাজ করতে গিয়ে ধর্ষনের শিকার হয়েছে এবং ঘটনাটি অন্য খাতে প্রবাহিত করতে জেনিয়াকে হত্যা করে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তারা থানায় ধর্ষনের অভিযোগে মামলা করতে গিয়েও পুলিশ তাদেও মামলা না নিয়ে অপমৃত মামলা নথিভুক্ত করেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী সকাল থেকে বিকাল ৩ঃ০০ পর্যন্ত জনিয়ার লাশ নিয়ে সড়ক, ন্যাম গার্ডেন ও কাফরুল থানা ঘেরাও করে রাখে। পরবর্তীতে উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের আশ^াসের ভিত্তিতে পরিবেশ শান্ত হয়।
অভিযুক্ত যুগ্মসচিব গত ০৭/০৩/২০১৬ ইং তারিখে দুপুর আনুমানিক ২ঃ১৫ ঘটিকার সময় তার স্ত্রী নাজনীন আক্তার ও ছেলে রুম্মান বির আহসান- কে নিয়ে কাফরুল থানায় যায়। তিনি থানায় উপস্থিত উপ কমিশনার (মিরপুর) জনাব কাউয়ুমুজ্জামান খান এর সাথে সাক্ষাত করেন। পরবর্তীতে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসলাম উদ্দিন জানান, জনিয়ামৃত ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত মামলা হয়েছে। যার নং ২৬৭/১৬, তারিখঃ ০৬/০৩/২০১৬ ইং। মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাসুদ আহমেদ বলেন- এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরে অভিযোগে বলা হয়েছে, মেয়েটিকে ধর্ষনের পর হত্যা করা হয়েছে, সেহেতু ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘটনার দিনই ভবনের কেয়ারটেকার এমদাদ, ছিদ্দিকসহ তিনজন লিফ্টম্যানকে আটক করেছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশের পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার জাকির হোসেন মনে করেন, মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যুও আগে মেয়েটি ধর্ষনের শিকার হয়েছে কিনা তা ময়না তদন্তের রিপোর্টেও পর স্পষ্ট হওয়া যাবে। তবে জনিয়াকে ধর্ষণ শেষে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে না- কি হত্যার পর তাকে ভবনের সামনে এনে রাখা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলা দেওয়া হলে লাশ ছিন্নভিন্ন ও রক্তাক্ত হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সে ধরনের আলামত ছিল না। লাশ উদ্ধারের সময় জনিয়ার শরীর জুড়ে আঘাতের চিহ ছিল। তার মুখ ওড়না দিয়ে পেচানো থাকলেও নাক ও মুখ ুদিয়ে রক্ত ঝরছিল। ডান হাত থ্যাতলানো, স্তনের নিচে এবং দুই পায়েরহাটুতে জখমের কালো দাগ ছিল বলে পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে বলা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থল ৩ নম্বর ভবন থেকে মাত্র ২০ গজ দূরে ন্যাম গার্ডেনের প্রধান গেটে দায়িত্ পালনকারী দারোয়ানরাও লাশটি নীচে পড়ার কোন শব্দ শোনেন্।ি
এঘটনায় পুলিশ ভবনের তিন লিফটম্যান এমদাদুল হক, ইয়াছুদুল হক ও সোহেল রানা এবং কেয়ারটেকার সিদ্দিকুর রহমানকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে এমদাদুল, ইয়াছুদুল ও সোহেলকে তিন দিন এবং সিদ্দিককে দুই দিনের রিমান্ড মন্জুর করে আদালত।
কিছু প্রশ্ন যার ভিত্তিতে সন্দেহ প্রবল হয়েছেঃ
(১) সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরীর সময় সেখানে কোন মহিলা পুলিশকে আনা হয়নি। জানা যায়, একজন এস আই উপস্থিত থেকে প্রতিবেদন তৈরী করেছে যা অত্যন্ত লজ্জাকর বিষয়।
(২) ভিকটিমের বাবা থানায় ধর্ষনের পর হত্যা মামলা করতে চাইলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। থানা যদি ইউডি মামলা না নিয়ে এফআইআর গ্রহন করতো তাহলে পরবর্তীতে ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতেও ব্যবস্থা নেওয়া যেত।
(৩) সুরতহাল প্রতিবেদনের সময় আলামত অনুযায়ী ভিকটিম ধর্ষনের শিকার হয়েছে বলে এলাকাবাসী মনে করছে।
তদন্তদলের মতামতঃ
তদন্তদল প্রকাশ্যে ও গোপনে সরেজমিনে তদন্তকরে যে তথ্য পেয়েছে তার উপর ভিত্তি করে মতামত দিচ্ছে ঃ
উপরোক্ত বিষয়সমূহ বিচার বিশে¬ষণ করে তদন্তদল এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, জনিয়া (১৫) ধর্ষনের শিকার হয়েছে বলে প্রাথমিক আলামত অনুযায়ী সত্য বলে ধারনা করা যাচ্ছে। তবে ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে তদন্তদল মনে করে।
তদন্তদলের সুপারিশঃ
১। অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা।
২। অপরাধীর শাস্তির বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশ করা যাতে আর কেহ এ ধরনে গর্হিত অপরাধ করার সাহস না পায়
৩। ভিকটিমকে সংস্থার পক্ষ থেকে আইনগত সহায়তা প্রদান করা যেতে পারে।
আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্তশেষ করেছি। ভবিষ্যতে আরো তদন্তের প্রয়োজন হতে পারে।